– একটু অপেক্ষা করো। এবার চোখ খোল। - ওটা কি আঁকলে? ওটা তো একটা হৃদয়। – হ্যাঁ, এটা হৃদয়। যেখানে তুমি আছো অসীম মমতায়, চিরন্তন ভালোবাসায়। এবার বলো আর কি চাই তোমার? - সারাজীবন শুধু ওখানেই থাকতে চাই।............. পূর্নেন্দু পত্রী (কথোপকথন -১)
বাংলা কাব্য জগৎে পূর্নেন্দু পত্রী একটি অসামান্য নাম । কবিতা ভালোবাসেন অথচ ‘কথোপকথন’ শিরোনামের কবিতাগুলো পড়েননি এমন কবিতার পাঠক খুব কমই আছেন। ’কথোপকথন’ শিরোনামের কবিতাগুলো কবিকে সর্বাধিক পরিচিত করেছে বাংলা ভাষাভাষী সকল পাঠকের কাছে। ’শুভঙ্কর’ আর ‘নন্দীনি’-র কথোপকথের মাঝে অনায়াসে চিত্রিত হয়েছে আমাদের টুকরো টুকরো জীবন।
পূর্ণেন্দু পত্রীর জন্ম ২ ফেব্রুয়ারী, ১৯৩৩ সালে হাওড়ায় | তাঁর পিতার নাম পুলিনবিহারী পত্রী এবং মাতার নাম নির্মলা দেবী। ১৯৪৯ সালে তিনি ইন্ডিয়ান আর্ট কলেছে ভর্তি হোন কিন্তু তিনি তাঁর শিক্ষা সমাপ্ত করতে পারেননি। তিনি কম্যুনিষ্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।
পূর্নেন্দু পত্রী ছিলেন প্রসিদ্ধ প্রচ্ছদ শিল্পী এবং চলচিত্র পরিচালক, কবি ও ঔপন্যাসিক ছিলেন | তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "এক মুঠো রোদ" - ১৯৫১ | ছোটদের জন্য অনেক বই লিখেছেন | কলকাতার ইতিহাসের উপর রমনীয় রচনা এবং অনেকগুলি কাব্যগ্রন্থও লিখেছেন | ছন্দের কৌশল এবং প্রতিমা নির্মাণের বিশিষ্টতা এবং গঠন ভঙ্গি দিয়ে কবিতা লেখায় তাঁর বিশেষ গুণ ছিল |তাঁর করা চলচিত্রে সমরেশ বসুর ছেঁড়া তমসুক, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রীর পত্র, মালঞ্চ- এর মত ছয়াছবি সিনেমার জগতে নিজের স্থান করে নিযেছে |
তাঁর লিখিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে - ’এক মুঠো রোদ (১৯৫১)’, 'শব্দের বিছানা (১৯৭২)’, ‘তুমি এলে সূর্যোদয় হয় (১৯৭৬)’, ‘আমার রবীন্দ্রনাথ” , ’কথোপকথন (৫ খন্ড), ইত্যাদি।
চিত্র পরিচালক হিসাবে তিনি যে সমস্ত ছায়াছবি পরিচালনা করেন - ক্ষীরের পুতুল (১৯৮২), ছোট বকুলপুরের যাত্রি (১৯৮১), গীতা গোবিন্দম (১৯৮১), কালীঘাট (১৯৮১), মালঞ্চ (১৯৭৯), পথ চিত্র (১৯৭৭), অবনীন্দ্রনাথ (১৯৭৬), ছেঁড়া তামসুক (১৯৭৪), স্ত্রীর পত্র (১৯৭২), স্বপ্ন নিয়ে (১৯৬৬)।